আমেরিকার সহযোগিতায় ইস্রায়েল প্রতিদিন নির্বিচারে ফিলিস্তিনে নিরীহ নারী, পুরুষ ও শিশু হত্যা চালিয়ে যাচ্ছে | বিশ্বের সমস্ত মানুষ তা দেখছে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে , বিশেষ করে আলজাজিরা চ্যানেল এ | মানুষ মারার দৃশ্য গুলি যখন বিভিন্ন মিডিয়াতে দেখানো হয় তখন সাধারন মানুষের হৃদয় ক্ষত বিক্ষত হয় | কিন্তু বিশ্বের দায়িত্বশীল দেশ বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্ব ও আরব বিশ্ব নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে |
ফিলিস্তিনে আমেরিকার ছত্র ছায়ায় সন্ত্রাসী দেশ ইস্রায়েল প্রতিদিন এই হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে| | শত শত কোটি
মানুষের চোখের সামনে প্রতিদিন নিরপরাধ মানুষ হত্যার এই দৃশ্য টিভি চ্যানেল এ ভেসে আসছে | এতে করে সাধারণ মানুষের হৃদ স্পন্দন বেড়ে যাচ্ছে |মানসিকভাবে আহত হচ্ছে এইসব অমানবিক ও নির্যাতনের দৃশ্য দেখে |
যারা এই যুদ্ধ বন্ধের জন্য কার্যকরী পদ্ধক্ষেপ নিতে পারে তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে | বিশেষ করে সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, বাহরাইন, ওমান, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ,তুরস্ক প্যালেস্টাইনের প্রতিবেশী দেশ হওয়া সত্ত্বেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না | এটি আরব রাষ্ট্র গুলির জন্য একটি লজ্জাস্কর ব্যাপার |
যুদ্ধে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র আমেরিকা তার সহযোগী ইস্রায়েল কে দিয়ে ফিলিস্তিনে গণ হত্যা চালাচ্ছে আর অন্যদিকে তারা আরব রাষ্ট্র গুলির সাথে অস্ত্র বিক্রির জন্য চুক্তি সই করছে | আরব রাষ্ট্র গুলি আমেরিকা কে জামাই আদর করে পাঁচতারা হোটেল এ আপ্পায়ন করছে | এই সব হত্যা যজ্ঞ তারা দেখেও যেন না দেখার ভান করছে | শত শত নারী শিশুর কান্নার আহাজারি তাদের অন্তর স্পর্শ করছে না |
আরব রাষ্ট্র গুলি নিজেদের স্বার্থ নিয়েই যেন বেশি ব্যস্ত | পাশেই তাদেরই বংশদ্ভুত জাতি ভাই বোন জীবন দিচ্ছে নির্মমভাবে কিন্তু এই ব্যাপারে ফিলিস্তিনির সাথে তাদের ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক সম্পর্কের যে যোগসূত্র রয়েছে তা তারা ভুলে যাচ্ছে | আরব জাতি গুলির মধ্যে যদি ধর্মীয় ও জাতীয়তাবোধ জাগ্রত না হয় তাহলে শিগ্রই হয়তো বা আল্লাহ তালার পক্ষ থেকে কোন গজব অপেক্ষা করছে |
বিপদে মানুষকে সহায়তা দেয়ার কথা প্রতিটি ধর্মেই বলা হয়েছে | কিন্তু আমরা তা না করে বরং অত্যাচারী ও জুলুমকারীকেই বেশি সহায়তা করছি | তাদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলছি | বিশ্বে মানুষের মধ্য থেকে মানবীয় গুণগুলি যেন হারিয়ে যাচ্ছে এবং শয়তান তার আদিপত্য বিস্তার করে চলেছে | শয়তানের কাছে, দুষ্ট চক্রের কাছে আমরা যেন পরাজিত হয়ে যাচ্ছি|
ইস্রায়েল এর বর্বরতা বিশ্ব মানব সমাজ এর অন্তরকে কেন নাড়া দিচ্ছে না ? তাদের বুদ্ধি, বিবেচনা, মেধা যেন শয়তান গ্রাস করে নিয়েছে|
মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব এ কথাটি যেন মানুষ মিথ্যা প্রমান করতে চাচ্ছে | অপরের দুঃখে দুঃখিত হওয়া, বিপদে মানুষকে সহায়তা করা মানবীয় বৈশিষ্টের দুটি গুন | কিন্তু ফিলিস্তিনে গত 2023 সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত যেভাবে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে কোন রকম জোরালো প্রতিবাদ বা নিষেধাজ্ঞা আসছে না সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইস্রায়েল এর বিরুদ্ধে
|
আর কতদিন অন্যায় অত্যাচার অবিচার এ বিশ্বকে দেখতে হবে ? কবে বন্ধ হবে জুলুম, অন্যায় অত্যাচার ও গণ হত্যা ?
ইসরায়েলিরা কি ভুলে গেছে তাদের বাপ্ দাদার ইতিহাস? তারা কি ফেরাউন সাজতে চায় ? তাহলে তাদের চিন্তা করা উচিত যে ফেরাউনের কি শাস্তি হয়েছিল| তাদের চিন্তা করা উচিৎ একজন সুপার পাওয়ার আছেন | সেই সুপার পাওয়ার থেকে যেকোনো সময় ফেরাউনের মতো গজব তাদেরকে গ্রাস করতে পারে |
ইস্রায়েল যে কি জঘন্য ও নৃশংষ হতে পারে তার প্রমান ত্রাণ কেন্দ্র গুলুতে বোমা বর্ষণ | জীবন বাঁচানোর জন্য যখন ফিলিস্তিনিরা খাদ্য নেয়ার জন্য ত্রাণ কেন্দ্রে যায় তখন তাদেরকে হত্যা করা হয় | কত নির্মম ও নিষ্ঠুর জাতি এই ইস্রায়েল ! আর এই নিষ্ঠুর পাপিষ্ঠ জাতিকে বাঁচানোর জন্য বিশ্বের সবচাইতে উন্নত দেশ বলে খ্যাত আমেরিকা সেই সন্ত্রাসী রাষ্ট্রকে সহায়তা দিতে মরিয়া | আমেরিকা তার সুনাম নিজেই ক্ষুন্ন করছে বিশ্ববাসীর কাছে | যেখানে বিশ্বের সব দেশের মেধাবী ছাত্ররা গিয়ে রিসার্চ করছে টেকনোলজির উন্নয়ন ঘঠাচ্ছে সেই দেশের রাজনীতির এই নোংরা পলিসি বিশ্ব বাসীকে সত্যিই হতবাক করে দিচ্ছে |
আরব রাষ্ট্রগুলির মতো অন্যান্য রাষ্ট্র গুলি বিশেষ করে অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্র গুলি ও কি তাঁদের মানবিক ও ধর্মীয় দায়িত্ব বোধ থেকে দূরে থাকবে? তারা কি তাদের ভাই বোনদের কান্না শুনতে পাচ্ছে না ? মুসলিম রাষ্ট্রগুলি কি সম্মলিত ভাবে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে না ইস্রায়েল ও আমেরিকার বিরুদ্ধে?
জাতি সঙ্গ কি করছে? দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর যে টার্গেট নিয়ে ইহা গঠিত হয়েছিল তা থেকে কি এই ফোরাম দূরে কি সরে গেছে ? 20টি মাস ধরে ছোট্ট একটি দেশ অন্যায় অত্যাচার করে যাচ্ছে নিরীহ মানুষদের উপর | আর এই প্রায় দুইশত দেশ এর সম্মিলিত একটি জোট থেকে তারা কিছুই করতে পারছে না ? কতদিন এই কালিমা বয়ে বেড়াবে এই আন্তর্জাতিক সংস্থা ? তাহলে বিশ্বের মানুষ কোথায় যাবে ? কার কাছে সাহায্য পাবে ? এই সঙ্গকে পুনর্ঘটনের সময় কি এখনো আসে নাই ?
আমরা শিকার করছি 2023 সালের 7 অক্টোবর হামাস ও তাদের সহযোগী গ্রুপ অপরাধ করছিল
251 জন ইস্রাইলি কে আটক করে নেয়ার জন্য | আমরা এটার জন্য তাদেরকে ধিক্কার জানাই | কিন্তু এই 251 জনের জন্য কি
60,000 সাধারণ , অসহায় ও নিরীহ মানুষ হত্যা করতে হবে ? এটা বিচারের জন্য কি আমরা আন্তর্জাতিক আদালতের সাহায্য নিতে পারতাম না ? এটা না করে ক্ষমতার অহংকারে হায়নার মতো সাধারণ মানুষের রক্ত নেয়ার খেলায় মেতে থাকতে হবে ? ঈসা ও মুসার ধর্ম কি আমেরিকা ও ইসরাইলকে এটাই শিক্ষা দেয় ?
এই গণ হত্যার নায়কেরা শুধু ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে না | এটা বিশ্বের সব জায়গার শান্তিকামী সাধারণ মানুষকে আহত করছে | আমরা সাধারণ নাগরিকেরা আর এই অমানবিক নির্মম হত্যা কান্ড দেখতে চাই না | শীগ্র এটার একটা প্রতিকার চাই |
আমরা আশা করবো আরব দেশ সহ সমগ্র মুসলিম দেশগুলি এক হয়ে এটার জন্য জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে | ফিলিস্তিন নিরীহ মুসলিম ভাই বোনদের বাঁচাতে হবে | কোরান ও ইসলামের আলোয় আবার আলোকিত হতে হবে মুসলমানদের | আমাদের ভিতর থেকে দুষ্ট শয়তানি বৈশিষ্ট গুলি দূরে ফেলে দিয়ে ভালো গুনগুলির চর্চা করতে হবে |
এটা কি ন্যায় বিচার ? যদি তা না হয় তাহলে বিশ্ব কেন পারছে না ইস্রাইলি ও মার্কিন শক্তিকে থামাতে? 20 মাস এর বেশি সময় হয়ে গেছে তারা কি আরো চুপ করে থাকবে ? তারা কি তাদের মানবিক গুণগুলি হারিয়ে ফেলেছে ? আমেরিকা ইসরাইলের 20 মাসের গণ হত্যা দেখে আসছে কিছু বলছে না কিন্তু ইস্রায়েল এ ইরানের 7 দিনের মিসাইল এটাক তাদের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে গেছে ? এটা কি ন্যায় বিচার, নাকি ব্যাভিচার ? কতদিন এই ব্যাভিচার উপভোগ করবে বিশ্ব ?
করি করবো বলে সময় নষ্ট না করে এখনই সময় শুরু করার | ফিলিস্তিন ভাই বোনেরা অসহায় এর মতো আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে | আসুন সবাই মিলে তাদেরকে হায়নার হিংস্র ছোবল থেকে রক্ষা করি | তা করতে না পারলে সৃষ্টি কর্তার কাছে আমাদের সবাইকে জবাব দিহি করতে হবে |
ইরান একমাত্র মুসলিম দেশ যে ফিলিস্তিনিদের মনে সাহস যোগাচ্ছে | অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রগুলির এখনই সময় সেই ইরানকে যেকোনো ভাবে সহায়তা করা | কোনোভাবেই ইরানকে যেন ইরাকের মতো হতে না হয় | আরব রাষ্ট্র গুলির উচিৎ ইরানকে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করা | শকুন পাখি রুপি আমেরিকার ছোবল থেকে রক্ষা করা |
আরব বিশ্ব যদি অন্য ভাবে সহযোগিতা করতে না পারে তাহলে তাদের উচিৎ নূন্যতম বাংলাদেশের আদর্শ অনুসরণ করা | মিয়ানমার সামরিক সরকার প্রায় এক মিলিয়ন মুসলমানদের জোর করে রাখাইন রাজ্য থেকে বের করে দেয় | বাংলাদেশ সরকার তার সীমাবদ্ধতা সত্বেও রাখাইন রাজ্যের অত্যাচারিত মুসলমানদের জায়গা দিয়েছে |
বাংলাদেশ অত্যন্ত ছোট্ট এরিয়ার একটি দেশ | বাংলাদেশ যদি এই উপকার টুকু করতে পারে তাহলে অন্যান্য বড় বড় আরব রাষ্ট্র গুলি কি নির্যাতিত ফিলিস্তিন ভাই বোনদের আশ্রয় দিতে পারে না ? আপাতত আশ্রয় দিয়ে তাদের জীবন রক্ষা করতে পারে | পরবর্তীতে শক্তি সঞ্চয় করে ইস্রায়েল এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বা ডিপ্লোমেটিক পদ্ধতিতে ফিলিস্তিনিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র ঘটনের প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে পারে |
পোস্ট সমন্ধে আপনার মন্তব্য দিন ও শেয়ার করেন বিভিন্ন ফোরাম ও বন্ধুদের মধ্যে | মোটিভেট করুন সকলকে | ফিলিস্তিনি ভাই বোনদের রক্ষায় ভূমিকা রাখুন |
No comments:
Post a Comment