Monday, August 5, 2024

সাবাশ বৈষম্য বিরুধী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ

২০২৪ এর  আগস্ট  শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পলায়ন করে এবং ছাত্রদের লং মার্চ এর প্রথম দিনেই এই আন্দোলনের অবসান হয়। 

আওমিলীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য বিনপি দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ চেষ্টা  সংগ্রাম করেও ক্ষমতা থেকে নড়াতে পারে নি ছাত্রদের আন্দোলন দেশের জনগণকে আশার আলো দেখিয়েছে। যেহেতু ছাত্ররা শতশত জীবনের বদলে আজ এ বিজয় অর্জন করেছে । তাই তাদের  এই আন্দোলন যাতে ভবিষৎ ছাত্রদের প্রেরণা যোগায় তাদের কে যাতে দেশ পরিচালনায় অংশ গ্রহণের সুযোগ দেয়া হয় তার ভিত্তি এখনই তৈরি করতে হবে।

স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর এত লোকের প্রাণ নাশ  বাংলাদেশের ইতিহাসে কলঙ্কময় ঘটনা  ও সত্যি দুঃখজনক ও লজ্জাজনক। সারা বিশ্বের প্রবাসী বাঙালিরা অত্যন্ত লজ্জা বোধ করে ও প্রতিবাদের স্লোগানে ফেটে পরে, সোশ্যাল মিডিয়াতে এইসব নির্মম কাহিনী ও ভিডিও ফুটেজ দেখে। তারা এত কষ্ট করে রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে দেশে আর সরকার এইসব অর্থ দেশের উন্নয়নের কাজে খরচ না করে দুর্নীতিবাজদের পকেট এ ভরার সুযোগ করে দিচ্ছে। হাজার হাজার কোটি  টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। সরকারের এইসব দুর্নীতিবাজদের জন্য দেশ এখন তলাহীন ঝুড়িতে পরিণত হয়ে যাচ্ছে।

দীর্ঘদিন যাবৎ ক্ষমতায়  থাকায়  সরকারের বিভিন্ন বিভাগে ঘুষ দুর্নীতি বেড়ে যায় । সম্প্রতি ছাগল কান্ড এর সাথে জড়িত ট্যাক্স অফিসের মতিউর ও IGP বেনজির ও আরো দুই পুলিশের DIG এর অবৈধ ভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা উপার্জন দেখে জনগণের বুঝতে বাকি নাই হাসিনা এবং তার সরকার কতটুকু দক্ষতার সাথে দুর্নীতিকে দমন করতে পেরেছেন । আরো কত পুলিশ অফিসার, NBR কর্মকর্তা, বিভিন্ন মেগা প্রজেক্টের পরিচালক, সচিব ও সরকারি বিভিন্ন এজেন্সিগুলোতে উর্ধতন কর্মকর্তারা দুর্নীতি ও অবৈধ অর্থের পাহাড় গড়েছেন তার হিসাব কে রাখে? জনগণ তাকিয়ে আছে কবে এসব দুর্নীতিবাজদের সম্পূর্ণ তালিকা ও শাস্তি দেখার জন্য?

যেখানে হাজার হাজার লোকের রাতে ঘোমানোর বা মাথা গোজার ঠাই নাই সেখানে সরকারের আমলা ও বিভিন্ন বাহিনীর কর্মকর্তারা হাজার হাজার কোটি  টাকা  মেরে দিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছেন। এটা জনগণকে বিশেষ করে ছাত্রদেরকে পীড়া দিচ্ছে । লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত  বেকার ছেলে মেয়ে সম্পদের এই অসম বন্ঠন দেখে হতবাক ।

একটা বিরাট সংখ্যক শিক্ষিত সমাজ বেকার।  তারা চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘোরছে অন্যদিকে আরেকটা দল অবৈধ ভাবে টাকা কামিয়ে  বিলাসবহুল জীবন যাপন করছে , এই সব ঘটনা ছাত্র আন্দোলনকে দারুণভাবে আলোড়িত করছে । গণতান্ত্রিক  একটি দেশের সরকারের দায়িত্ব হলো সম্পদের সুষম বন্ঠন, দুর্নীতি দমন এবং বেকারদের চাকরি প্রদান কিন্তু বাংলদেশের বর্তমান  সরকার তা করতে ব্যর্থ হয়েছে।   

১৯৫২,১৯৬৯, ১৯৭১ ও  ১৯৯০ এর আন্দোলনে ছাত্ররাই নেতৃত্ব  দিয়েছে । ২০২৪ এর ছাত্র আন্দোলন তারই ধারাবাহিকতা  । সর্বক্ষেত্রে যখন দুর্নীতি, দুঃশাসন ছেয়ে যায় , দেশে বেকারত্ব বেড়ে যায়, জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়, মানুষে মানুষে বৈষম্য বেড়ে যায়, বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে সাধারণ ছাত্রদের জীবন নিরাপদ নয় তখন মানুষের মনে অসন্তুষ দানা বাঁধতে থাকে, তাই বাধ্য হয়ে ছাত্ররা  আন্দোলনে রাস্তায় নামে সরকার এর  বিরুদ্ধে ।  এই কোটা আন্দোলন তারই বহিঃপ্রকাশ।

 অতীতে ছাত্ররা অনেক আন্দোলন করে স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটিয়েছে কিন্তু সুবিধা নিয়েছে পূর্বে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলি।  ছাত্ররা থেকেছে অবহেলিত। এখন দরকার ছাত্রদের নিয়ে একটি আলাদা রাজনৈতিক দল ঘটন করা। যারা নীতি, নৈতিকতা ও সত্যিকারের দেশপ্রেম দিয়ে দেশকে উন্নয়নের দিকে  এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে  ও ছাত্রদের অধিকার প্রতিষ্টার জন্য কাজ করতে পারে ।

 আমরা BNP ও আওয়ামীলীগে  আর বিশ্বাস রাখতে পারছি না। আমরা ছাত্র, শিক্ষক ও লেজুড় বিহীন অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত নতুন  একটি দলের দিকে তাকিয়ে আছি । যারা তারুণ্য ও মেধা দিয়ে দেশের নেতৃত্ব দিবে, দেশে শিল্পায়নের জন্য কাজ করবে ও দেশ থেকে বেকার সমস্যা দূর করবে । যে  দল দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করবে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্টা করার জন্য কাজ করবে।  বাংলাদেশের জনগণ সেইরকম একটি দলের দিকে তাকিয়ে আছে | তারা নতুন ও তরুণ  নেতৃত্বের জন্য অপেক্ষা করছে |

এই মুহূর্তে যা দরকার তা হলো দুর্নীবাজ পুলিশ, আমলা, NBR কর্মকর্তা যারা অবৈধ ভাবে টাকা অর্জন করছেন তা ফেরত আনা। এইসব দুর্নীতিবাজরা যাতে দেশ ছেড়ে যেতে না পারে তারজন্য প্রতিটি চেক পোস্ট ও এয়ারপোর্ট গুলুকে কড়া পাহারার ব্যবস্থা করা। ছাত্রদেরকে এই ব্যাপারে অন্তর্বর্তকালীন সরকার কে পরামর্শ দেয়া। প্ৰয়োজনে  অভিযোগের ভিত্তিতে তাদেরকে কারাগারে আটক রেখে বিচারের ব্যবস্থা করা। 

 

 

 


No comments:

Post a Comment